গ্র্যাজুয়েশনের পূর্বে যে স্কিলগুলো জানা জরুরি
Skill
গ্র্যাজুয়েশনের পূর্বে যে স্কিলগুলো জানা জরুরি
July 14, 2024, 10:47 p.m.
5
Metheela Farzana Melody

ভার্সিটি লাইফ- অনেকের জন্য অনেক সুন্দর, কারো ক্ষেত্রে হয়ত গল্পটা ভিন্ন রকম। এখন আপনার জীবনের অনেকটা অংশই নির্ভর করে আপনি নিজেকে ও নিজের সময়কে কিভাবে কাজে লাগিয়েছেন। এই যুগে এসেও শুধু গতানুগতিক ধারা অনুসরণ করা যে আমাদের জন্য না, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ভার্সিটি লাইফ- আমাদের জন্য আশীর্বাদ তখনই হবে যখন আমি এই সময়কে সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে পারব। কারণ সময় কারো জন্য অপেক্ষা করে থাকে না, তাই সময় নষ্ট করলে ক্যারিয়ার গড়ার এই সুন্দর সময় আর ফিরে আসবে না। তাই অনেক কিছু করার ইচ্ছা থাকলেও সম্ভব হবে না।


একটা সুন্দর ক্যারিয়ারের জন্য বেশ কিছু প্যারামিটার থাকে, যেমন একাডেমিক রেজাল্ট কেমন, কোথায় কোথায় অভিজ্ঞতা রয়েছে কিংবা কোনো বিশেষ দক্ষতা আছে নাকি যা তার কাংক্ষিত চাকরিতে কাজে লাগাতে পারবে বা সহায়তা করবে। যেহেতু দিন বদলাচ্ছে, তাই দক্ষতা কিংবা অভিজ্ঞতা অর্জনের কোনো সুযোগ পেলেই গ্রহণ করা উচিত। একটু দেখে নেওয়া যাক বর্তমানে আলোচিত কিছু স্কিলস যা আমাদের পরবর্তী ক্যারিয়ার জীবনে সহায়তা করবে।

১। পাব্লিক স্পিকিংঃ এই একুশ শতাব্দীতে এসে নিজেকে প্রকাশ করার ক্ষমতা না থাকলে তা নিতান্তই দুঃখজনক। নিজের আইডিয়া প্রকাশ কিংবা কোনো বিষয় উপস্থাপন করা একটি আর্ট, যা প্রতিনিয়ত কর্মক্ষেত্রে একজনকে এগিয়ে নিয়ে যায়। এখন একজনের সাথে কথা বলা এবং একদল , ক্ষেত্রবিশেষে শত কিংবা হাজারখানেক মানুষের সামনে কথা বলা, উপস্থাপন করা খুব সহজ নয়। পাব্লিক স্পিকিং আমাদের দ্রুত চিন্তা ভাবনা করতে, কার্যকর যুক্তি গঠনে এবং মতামত প্রকাশে সহায়তা করে। বর্তমানে প্রায় প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেজেন্টেশন বা টিউটোরিয়াল এর ব্যবস্থা আছে, আবার কিছু কিছু প্ল্যাটফর্মে পাব্লিক স্পিকিং কোর্সই চালু রয়েছে। সেক্ষেত্রে আমরা এই জায়গাগুলো থেকে নিজেকে পাব্লিক স্পিকিং এ দক্ষ করে তুলতে পারি।

২। বিজনেস রাইটিংঃ আমরা বিভিন্ন জায়গায় যাই, কথা বলি। সব জায়গার ভাষা একরকম নয়, আবার সব জায়গায় একই ধরনের ভাষা ব্যবহার করা উচিতও নয়। চাকরিতে ঢোকার পূর্বে যেই জিনিসটা মাথায় রাখা উচিত তা হলো, আপনি কোনো অফিসিয়াল লেটার, বিজনেস লেটার লিখে অভ্যস্ত কিনা। বিজ্ঞাপন, ইমেইল, অফার, প্রমোশন লেটার, ইনভাইটেশন লেটার বা আমন্ত্রণপত্র, মেমো যেকোনো ডকুমেন্টেশনের ক্ষেত্রে প্রফেশনালিজম মেইনটেইন করা উচিত। সেক্ষেত্রে বিজনেস রাইটিং স্কিলস অতীব গুরুত্বপূর্ণ ।

৩। নেটওয়ার্কিং এবং রিলেশনশিপ বিল্ডিংঃ কর্মক্ষেত্রে যার সাথে কথা বলছেন কিংবা কোনো ডীলে এপ্রোচ করছেন, তার সাথে নেটওয়ার্কিং জিনিসটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত কন্টাক্ট করা, তার কালচারাল পার্স্পেক্টিভকে সম্মান করা, তার সাথে প্রোপারভাবে নিজেকেও প্রেজেন্ট করা, ভাষার সাবলীলতা রক্ষা করা, সবই গুরুত্বপূর্ণ। কথায় বলে- “প্রথম দর্শনেই বাজিমাত”, কথাটা এই ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তাই যখন এপ্রোচের কথা আসে, তখন আপনাকে যেন মনে রাখে সেই ব্যবহার ও ফীডব্যাক দিতে হবে।

৪। প্রব্লেম সল্ভিংঃ চাকুরি কিংবা ব্যাবসায়িক ক্ষেত্রে কে কিভাবে কখন কোন সমস্যায় পড়বে তা কেউই জানি না। কিন্তু কোনো সমস্যায় পড়লে তা সল্ভ করার জন্য যথেষ্ট ক্যাপাবিলিটি থাকাও জরুরি, সেটা হোক নিজের কিংবা টীমের। প্রবলেম সল্ভিং এর ক্ষেত্রে অর্গানাইজেশনাল পার্স্পেক্টিভ আর তার সাথে ক্ল্যাশিং পয়েন্ট জানাও জরুরি। আর প্রব্লেম সল্ভিং এর জন্য সেই রিসোর্স থাকাও দরকার, এক কথায় মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে থাকা দরকার, সাথে দরকার ক্রিটিক্যাল থিংকিং এর ক্ষমতা।

৫। Stress Management: পড়াশোনার ক্ষেত্রে পরীক্ষার সময় আমাদের অনেক স্ট্রেস থাকে, অনেকে সেটা উতরে যাই, অনেকে আটকে যাই। স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট শেখাটাও একটা আর্ট। আপনি কিভাবে আপনার কাজগুলো ভাগ করে নিচ্ছেন, কাজ ভাগের সময় আপনি কি কি জিনিস মাথায় রাখছেন, যেমন- কাজের গুরুত্ব, কাজের পরিধি, কাজ করতে কতটুকু সময় লাগবে, ডেডলাইন এইসব কিছু মাথায় রেখে কাজ ডিস্ট্রিবিউশন ও টাইম ম্যানেজমেন্ট ও একটি দক্ষতার মধ্যে পড়ে। তাই গ্র্যাজুয়েশনের পূর্বে এই দক্ষতাটা জানা জরুরি বটেই, বরং আপনি চাইলে ভার্সিটি লাইফ থেকেই আপনার প্রতিটা কাজে এই দক্ষতা কাজে লাগাতে পারেন। কারণ- Work smart, not Hard.

৬। সফটওয়্যার স্কিলসঃ টেকনোলজির যুগ, তাই অবশ্যই প্রযুক্তির উপর ভালো দখল থাকা প্রয়োজন। যেমনঃ মাইক্রোসফট ওয়ার্ড কিংবা এক্সেল এর কাজ এখন দুধভাত। এগুলোর পাশপাশি বিভিন্ন স্মার্ত apps, স্মার্ট টুলস, ওয়েবসাইট এসব ব্যবহার জানা থাকতে হবে। এতে আপনি আপনার একাডেমিক এর পাশাপাশি Tech-smart guy ও হতে পারবেন, এই দক্ষতাই আপনাকে অন্য সবার থেকে আলাদা করে ফুটিয়ে তুলবে।


এ তো গেলো বিভিন্ন স্কিলস এর কথা। এর বাইরেও আরও হাজারো স্কিলস আছে শেখার জন্য। তাই বস এনা থেকে সেই সময়টা কাজ এ লাগানো উচিত।শেখার কোনো শেষ নেই, জানারও কোনো বয়স নেই, তাই শিখে রাখলে আপনার লাভ বৈকি ক্ষতি হবে না। আর তার জন্য উপযুক্ত সময় হলো শিক্ষাজীবন। শিক্ষাজীবনের উপর নির্ভর করে গ্রো করবে ক্যারিয়ার জীবন।